ফেসবুকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে ইঙ্গিত করে ‘দুই বলদ’ বলে জামালপুর জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ফারহান আহমেদের একটি আপত্তিকর স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে জেলা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। জেলা ছাত্রলীগের বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা ১২ এপ্রিল দুপুরে শহরে বিক্ষোভ মিছিল, প্রধান সড়ক অবরোধ ও সমাবেশ করে ফারহান আহমেদের বিরুদ্ধে দলীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে।
![]() |
| কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দুই নেতাকে ‘দুই বলদ’ বলায় জামালপুর জেলা ছাত্রলীগের বিক্ষোভ মিছিল। |
জানা গেছে, জামালপুর জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ফারহান আহমেদ ১১ এপ্রিল সন্ধ্যায় তার ফেসবুক আইডিতে ‘ছাত্র রাজনীতির দুই বলদ’ শিরোনামে একটি স্ট্যাটাস দেন। সেখানে কোটা আন্দোলনে আহত ছাত্রলীগকর্মী এশা ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের ছবিও যুক্ত করা হয়েছে। ওই স্ট্যাটাসে বলা হয়েছে- ‘কোটা আন্দোলনে নীল নকশা সামলাতে পুরোপুরি ব্যর্থ, এদের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের কোনো কর্মীর নিরাপত্তা নেই, প্রমাণ এশা। ছাত্রলীগের একজন সাবেক নেতা হিসেবে আমার দাবি আগামী ছাত্রলীগের সম্মেলন এই দুই বলদকে মাইনাস রেখে করানো হোক।’
জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ফারহান আহমেদের এই স্ট্যাটাসটি ১১ এপ্রিল রাতের মধ্যেই ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এ নিয়ে জেলা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দেয়। জেলা ছাত্রলীগের বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা ১২ এপ্রিল দুপুর একটার দিকে শহরের বকুলতলায় জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিল নিয়ে তারা শহরের তমালতলা মোড়ে প্রায় আধাঘন্টা প্রধান সড়ক অবরোধ করে। পরে মিছিলটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে দয়াময়ী মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নিহাদুল আলম নিহাদ ও সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ বিন জালাল প্লাবন।
সমাবেশ থেকে জেলা ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ফারহান আহমেদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ ও তাকে নি:শর্ত ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানানো হয়।
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নিহাদুল আলম নিহাদ বলেন, ‘যুবলীগনেতা ফারহান কাজটি ভালো করেননি। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদককে ইঙ্গিত করে আপত্তিকর ওই স্ট্যাটাসটিতে ছাত্রলীগের শুধু কেন্দ্রীয় কমিটিই নয়, সারাদশে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছেন। এজন্য তাকে নি:শর্ত ক্ষমা চাইতে হবে। আমরা এ আপত্তিকর স্ট্যাটাসের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে দলীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।
এ দিকে জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ফারহান আহমেদ অভিযোগ প্রসঙ্গে বলেন, ‘কে বা কারা গতকাল (১১ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাতটার দিকে আমার ফেসবুক আইডি হ্যাক করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদকের বিরুদ্ধে আপত্তিকর স্ট্যাটাস দেয়। আমি ওই স্ট্যাটাস পোস্ট করিনি। জেলা ছাত্রলীগের বিক্ষোভ মিছিল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমার ফেসবুক পেজ থেকে ওই স্ট্যাটাসটি মুছে ফেলেছি। একই সাথে ভবিষ্যতেও ফেসবুকের মাধ্যমে আমার ক্ষতি করার আশঙ্কায় আজ (১২ এপ্রিল) সকালে আমি সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও করেছি। আমাকে ব্যক্তিগতভাবে হেয় প্রতিপন্ন ও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্যই জেলা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা হয়তো রাস্তায় নেমেছে।’ বাংলারচিঠি ডটকম।


No comments:
Post a Comment